Monday 16 June 2014

লিখেছেনঃ Souro Jeet


কিছু মৌলিক এবং কিছু অনুবাদ থৃলার গল্পের সংকলন এই বইটি।বাতিঘর প্রকাশনী থেকে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর সম্পাদনায় ২০১৩ সালের বইমেলায় বেরিয়েছে।

১।মেমেস্তা মোরি-জোনাথান নোলান,অনুবাদ-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বইয়ের প্রথম গল্প এটি।প্রথম যখন পড়া শুরু করি ঠিকমত কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।গল্পটি শেষ হবার পর মোটামুটি বুঝতে পারি,যদিও এখনো পুরোপুরি সব বুঝতে পারিনি।যাই হোক গল্পটি মন্দ লাগেনি। আমার রেটিং-৩.৮/৫

২।লটারি-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন সত্যি বলতে কি প্রথম গল্পটা পরে একটু হতাশই হয়েছিলাম।কিন্তু আমার এই হতাশা এক ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিল লটারি।নিঃসন্দেহে এটাই এই সংকলনের সেরা গল্প।একটি লটারির টিকিট আর সেটিকে ঘিরে মানুষের অদম্য লোভকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে এই অসামান্য গল্পটি।এটি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর একটি মৌলিক লেখা।তিনি অসামান্য দক্ষতায় লেখাটিতে তুলে এনেছেন মানব চরিত্রের এক আদিম রিপুকে। আমার রেটিং-৫/৫

৩।ফলিং-ক্রিস মুনি,অনুবাদ-তানজীম রহমান “ম্যালকম ফ্লেচার এফবিআই এর মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টের একজন।অন্যদিকে মার্লেনা সাধারন এক ল্যাব টেকনিশিয়ান।এই মার্লেনাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে ম্যালকমকে ধরার টোপ হিসেবে।” গল্পটা ভালোই লেগেছে।অনুবাদকও ভাল কাজ করেছে। আমার রেটি-৪/৫

৪।স্বদেহভোগী-তানজীম রহমান একটি হত্যারহস্যকে ঘিরে গল্পটি এগিয়ে চলে।গল্পটি পড়তে খারাপ লাগেনি,কিন্তু এর নামকরণের সার্থকতা কতটুকু বুঝলাম না। আমার রেটিং-৩.৫/৫

৫।আবার ফিরে আসে-শরীফুল হাসান এই সংকলনের অন্যতম সেরা লেখা এটি।“পার্থ আহমেদ,দেশের নামকরা এক তারকা।কিন্তু তার পিছে কে যেন লেগেছে প্রতিশোধের নেশায়।”লেখক গল্পটিতে অসাধারণ কাজ করেছেন। আমার রেটিং-৪.৫/৫

৬।শোধ প্রথমেই একটু কনফিউসন আছে।সুচিপত্রে গল্পটির লেখক শরীফুল হাসান থাকলেও,মূল গল্পে লেখকের জায়গায় নাম লেখা শরীফুল ইসলাম এর! “আজহার আলী দুই বছর ধরে একটি সমস্যা নিয়ে চিন্তা করছেন।আজ তার সমাধান তিনি পেয়েছেন।”গল্পটি ভালই লেগেছে। আমার রেটিং-৪/৫

৭।দ্য ফেস ইন দি উইন্ডো-হিদার গ্রাহাম,অনুবাদ-রবিন জামান খান  “ঝড়ের রাত।বাসায় একা বেথ।সেসময় সে জানালার কাঁচে দেখে মুখটা।চোখদুটো টকটকে লাল,ঠিক যেন হরর ছবিতে কোন শয়তানের চোখের মত জ্বলছে।” আমার রেটিং-৪/৫

৮।দ্য আবেলার্ড স্যাংশন-ডেভিড মোরেল,অনুবাদ-রবিন জামান খান “সল এবং এরিকা,তারা দম্পতি।এরিকা খুন করতে চায় হাবিবকে।সল চায় এরিকাকে আটকাতে।”গল্পের প্রথমে এই ধারনা দিলেও গল্পের শেষে এই ধারনা থাকে না। আমার রেটিং-৪/৫

৯।সুইসাইড,রবিন জামান খান “মি. হাসান জগিং করতে করতে থামেন এক বেঞ্চের কাছে।দেখতে পান এক যুবককে।এই যুবক নাকি আত্মহত্যা করতে চায়।মি. হাসান চেষ্টা করেন তাকে আটকাতে।তারপর?”গল্পটি ভাল লেগেছে যেমন বলা যাবেনা,খারাপ লেগেছেও বলা যাবেনা। আমার রেটিং-৩.৫/৫

১০।হিরু-জাহিদ হোসেন গল্পটি এক কথায় বলতে গেলে একটি রম্য থৃলার।বেশ মজাই পেয়েছি পড়তে। “ওর নাম বাবু হলেও সবাই আদর করে ডাকে কুত্তা বাবু!সে এক শীর্ষ সন্ত্রাসী।কত লোক যে তার জীবন নিতে চায় তার কোন হিসেব নেই।কিন্তু সে এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়।সে যাচ্ছে তার ছোটবেলাকার জিগরি দোস্ত নাবিদের সাথে দেখা করতে।” আমার রেটিং-৪.৫/৫

১১।পুণর্জাগরণ-জাহিদ হোসেন “কবর দেয়ার পাঁচ দিন পর ইলিয়াস মিয়া দৌলতপুরে সশরীরে হাজির হলে সারা গ্রামে তোলপাড় শুরু হল”গল্পটির এই প্রথম লাইনটিই যথেস্ত যে কারো মনযোগ আকর্ষণের জন্য।এটিও আগের গল্পটির মত রম্য স্টাইলের হলেও এর রম্য রসের মাত্রা কম।কারন এতে যোগ হয়েছে কিছু মানবিক দিকও। আমার রেটিং-৪/৫

১২।মমতাময়ী-মাশুদুল হক দারুন এক গল্প।এই সংকলনে আমার অন্যতম প্রিয় গল্প এটি। আমার রেটিং-৪.৫/৫

১৩।নির্বাণ-নওশের ইবনে হালিম ডন একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে গল্পটি লেখা।প্রথমে কিছু বুঝতে পারছিলাম না।শেষে বুঝতে শুরু করি।ভাল ভাবে বোঝার জন্য গল্পটি আবার পড়লাম।এবার সব ক্লিয়ার হল।লেখকের এই লেখার ধরণটি প্রশংসনীয়।যদিও আমার মতে তিনি লেখাটিকে এত জটিল না করলেও পারতেন।সব মিলিয়ে লেখাটি পড়তে খারাপ লাগেনি। আমার রেটিং-৩.৫/৫

নিঃসন্দেহে বাতিঘরের একটি দারুন প্রয়াস এই সংকলনটি।আমার জানামতে তারা প্রতিবছর এরকম একটি সংকলন বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।যার ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে বের হয়েছে থৃলার গল্প সংকলন ২।তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।আশা করি বাতিঘরের কাছ থেকে প্রতিবছর এমন একটি সংকলন উপহার পাব।

এক নজরে
বইয়ের নাম-থৃলার গল্প সংকলন। সম্পাদক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। প্রকাশক-বাতিঘর প্রকাশনী। মোট গল্প-১৩ টি। মৌলিক গল্প-৯ টি। অনুবাদ-৪ টি। মোট লেখক-৭ জন। প্রকাশকাল-ফেব্রুয়ারি বইমেলা,২০১৩। প্রচ্ছদ-ডিলান। গায়ের মূল্য-১৭০ টাকা। আমার রেটিং-৪/৫

সোর্সঃ বই লাভার'স পোলাপান (Boi lover's polapan)

0 comments:

প্রিয় কবিতারা...