Sunday 15 June 2014

রকিব হাসানকে নিয়ে কিছু ভাবতে গেলে দুটো কথাই প্রথমে মনে আসে। প্রথমত তাঁর বয়স আন্দাজ করা ছিল সত্যি দুরুহ বিষয়। ২৫, ৩৫ নাকি ৪৫... অনুমান করে বোঝার কোন উপায় ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে তাঁর বয়স কত জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রসিকতা করে জবাব দিয়েছিলেন, ‘বাবা বলেন বাও কি তেও, মা বলেন আরও কম...’
আর দ্বিতীয়টা হলোগে তাঁর কথা বলার ধরণ আর রসবোধ। পুরোপুরি শুদ্ধ করে কথা বলতেন না, হাকিমভাই কিংবা প্রিন্সভাই এর মত “লিখেছি”,“খেয়েছি”, “করেছি” না বলে অবলীলায় “লিখসি”, “খাইসি”, “করসি” বলে যেতেন। কথার ভেতর রস যেমন ছিল, তেমনি কঠিন হুলও ফুটাতেন তিনি মুহূর্তের মধ্যে। তাঁর সাথে তর্ক করে সহজে পার পাওয়া যেতনা, প্রতিপক্ষের ছোঁড়া ঢিল মাঝপথেই লুফে নিয়ে পালটা জবাব দিয়ে একেবারে কলজে ফুটো করে দিতে তিনি ছিলেন রীতিমত সিদ্ধহস্ত।
সেই রকিব ভাই তাঁর চাঁছাছোলা কন্ঠে একদিন আমাকে বলে বসলেন, ‘বিয়াশাদী করসেন? বাচ্চা-কাচ্চা হইসে নাকি দুইএকটা?’
সবিনয়ে জানালাম- প্রথমটাই হয়নি, দ্বিতীয়টা পয়দা হবে কীভাবে?
‘তাহলে বুঝলেন কীভাবে বাচ্চাকাচ্চা কেমনে মানুষ করতে হয়?’ উনি ছাড়বার পাত্র নন। আমার মাথায় এতোক্ষণে ঢুকল, তিনি আমার সাম্প্রতিক লেখা ধরে টান দিয়েছেন। চাইল্ড সাইকোলজির উপর লেখা একটা ফিচার। ধমক-ধামক কিংবা সমালোচনা এড়িয়ে কীভাবে সন্তানের হাতে সাফল্য এনে দেয়া যায় এ নিয়ে ছিল লেখাটা।
আমাকে জবাব দেবার কোনরকম সুযোগ না দিয়ে বলে উঠলেন তিনি, ‘একবার যখন আকাম করসেনই তো আরেকবার না হয় করেন...এই নেন, ধরেন...”
একটা বিদেশি পেপার-কাটিং এর ফটোকপি আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন তিনি। উল্টে-পাল্টে দেখি এও চাইল্ড সাইকোলজির উপর, শাস্তি বা বকাঝকা ছাড়া কীভাবে সন্তানকে বশে রাখা যায় তা নিয়ে লেখা। আড়চোখে তাকিয়ে দেখি ততোক্ষনে উনি টেবিলের উপর ঝুঁকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, ঠোঁটের কিনারে হাল্কা একটু হাসি- বোঝা যায় আবার যায়ও না... দেখা যায় আবার যেন যায়ও না...


লিখেছেনঃ Mahbubur Rahman Shishir
নেওয়া হয়েছেঃ 'বই লাভার'স পোলাপান গ্রুপ' হতে

0 comments:

প্রিয় কবিতারা...