Saturday 28 September 2013


লেখাটি পড়তে পড়তে কখন যে চোখ ভিজে উঠলো বুঝতেই পারিনি! প্রিয় তিন গোয়েন্দার এত করুন পরিনতি স্যারের অসহায়ত্ত আমাকে সত্যিওই নির্বাক করে ফেলেছে......... 
                                   তিন গোয়েন্দার লেখক রকিব হাসান এবং মিজানুর রহমান কল্লোল ভাইবইমেলা -২০১৩
আমি রকিব দা র সাথে প্রায় ২ বছর আগে দেখা করেছিলাম। রকিব দা কে আমরা অনেক খুঁজছিলাম শুধু একটা জিনিস জানার জন্য। কেন তিনি আগের মতো এত সুন্দর করে তিন গোয়েন্দা লেখেন না। তার সাথে দেখা করতে পারব ভাবি নি। অনেক টা আন্দাজের উপর ভর করে আচমকাই তার সাথে আমার দেখা হয়ে গেছে।

এখানে এক জন লিখেছেন শামসুদ্দিন নওয়াব কি কাজী দা কি না। এর পেছনে একটা দুঃখ জনক ইতিহাস আছে।

রকিব দা গম্ভীর মানুষ। ঘর থেকে খুব একটা বের হন না। কথা ও বলেন কম। খুব বেশি আফসোস করে কিছু বলতে চান না। কিন্তু বলে ফেললেন তার জীবনের কিছু কথা। যে সেবা প্রকাশনীর হাত ধরে তার চলা শুরু সেই সেবা প্রকাশনী ই তার সাথে এমন বিশ্বাস ঘাতকতা করল।

কাজি দা যত দিন সেবা প্রকাশনীর হেড ছিলেন তিনি রকিব দা কে খুব স্নেহ করতেন। কাজি দার বয়স হয়েছে। তার ছেলে রা এসে দখল করল তার জায়গা। তারা রকিব দা কে বলল- আপনাকে আমাদের আর কোন দরকার নেই। আমরা নিজে রাই তিন গোয়েন্দা অনুবাদ করে নিতে পারব। রকিব দা কে চলে যেতে বললেন- হুমকি দিলেন যাতে তিনি কখনোও তিন গোয়েন্দার স্বত্ব দাবি না করেন। মূলত এ স্বত্ব সেবা প্রকাশনীর ই। কাজী দার সাথে তার সম্পর্ক খুব ভালো ছিল বলে তিনি তখন কোন আপত্তি করেন নি। তিনি ভাবতে পারেন নি কখনো এমনটি হবে।

তার পর যে কাজ টি তারা শুরু করল সেটা খুব খারাপ। অনুবাদের ধার না ধেরে তারা নিজে রা ইচ্ছা মতো লেখা লেখি শুরু করল। যা মন চায় তাই । আপনারা তো জানেন ই, রকিব দার তিন গোয়েন্দা লেখার কোন তুলনা হয় না। আর এখন তিন গোয়েন্দার মান কত খারাপ হয়ে গেছে। এগুলা ছাপা হতে লাগলো সামসুদ্দিন নওয়াব নামে। মূলত সামসুদ্দিন নওয়াব নামে কারো অস্তিত্ব নেই।

এর পর এমন হওয়া শুরু করল যে যারা কাজী দার ছেলের বন্ধু বান্ধব পরিচিত, আনাড়ি, তারাও লেখা শুরু করল। এগুলা সামসুদ্দিন নামে ছাপা হত, মাঝে মাঝে সন্দেহ দূর করার জন্য রকিব দার নাম ও সাথে দেয়া হত। রকিব দা বললেন- মুনিয়া, তুমি যদি এখন একটা গল্প পাঠাও, ওটাও সামসুদ্দিন নওয়াব এর নামে ছাপানি হবে।

আমরা খুব কষ্ট পেলাম শুনে। বললাম- দাদা, আপনি ওদের নামে কেস করুন, মামলা নড়ুন, তিন গোয়েন্দা আপনার সৃষ্টি। আর এরা এদের এভাবে ধংস করে দিবে? আপনি আবার লিখুন, আবার ওদের ফিরিয়ে আনুন আমাদের মাঝে... রকিব দা মৃদু হেসে বললেন- যে সেবা প্রকাশনীর হাত ধরে আমার চলা শুরু, তার নামে আমি কেস করব? কাজী দার ছেলে দের বিরুদ্ধে? যে কাজী দা আমাকে দাঁড় করিয়ে ছিলেন তোমাদের সামনে?? এ আমি পারব না কখনো। তিন গোয়েন্দা বেঁচে থাকবে, তোমাদের মাঝেই।

আমরা যখন চলে আসছিলাম দেখলাম আলা ভোলা মানুষ টা বসে গেছে কম্পিউটার এর সামনে, অনুবাদ করতে। তার চারদিকে বই এর সমুদ্র। কোন দিকে আর মনোযোগ নেই... একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলাম, আমার সেই ছেলে বেলায় ঝড় তোলা মানুষ টা কে, যে কিশোর, মুসা, রবিন মিশে ছিল আমার সমস্ত সত্ত্বায় ...। তার কারিগর কে...। তার পর চলে এলাম। বুক ভরা বেদনা আর চোখের কোণে টলটলে অশ্রু নিয়ে..................।
রকিবদার আরও কিছু ছবি:
স্ট্যাটাস কা্রটেসীঃ Fariha Islam Munia আপু
সংগ্রহঃ "বই বই আর বই" পেজ থেকে

0 comments:

প্রিয় কবিতারা...